শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির মধ্যে আয়রন একটি অপরিহার্য খনিজ উপাদান। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে রক্ত স্বল্পতা দেখা দেয়। আয়রন মূলত শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি করতে সাহায্য করে, যা শরীরে অক্সিজেন সঞ্চালনের জন্য অপরিহার্য।
আয়রনের ঘাটতির অনেক কারণ থাকতে পারে। যদি একজন ব্যক্তি তার ডায়েটে পর্যাপ্ত আয়রন গ্রহণ না করেন, তাহলে তার শরীরে আয়রনের মাত্রা কমতে থাকে। অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ অর্থাৎ পাকস্থলী বা অন্ত্রে অভ্যন্তরীণ রক্তপাতের কারণেও শরীরে আয়রনের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে আয়রনের ঘাটতি বেশি দেখা যায়। আয়রনের ঘাটতি একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে অনেক উপসর্গ দেখা যায়, যা শনাক্ত করে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা জরুরি।
সঠিক জীবনধারা ও খাদ্যাভ্যাস ঠিক রেখে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আপনি যদি আয়রনের ঘাটতির কোনো উপসর্গ লক্ষ্য করেন, তাহলে তা উপেক্ষা করবেন না বরং দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
আয়রনের ঘাটতি দূর করবেন কীভাবে?
সীমিত দুগ্ধ গ্রহণ
অত্যধিক কফি, চা বা দুগ্ধজাত খাবার গ্রহণ করলে আয়রন শোষণে সমস্যা হতে পারে। যাদের আয়রনের ঘাটতি আছে তাদের খুব বেশি চা বা দুগ্ধজাত দ্রব্য খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত।
আয়রন সমৃদ্ধ খাবার
যারা আয়রনের ঘাটতিতে ভুগছেন তাদের খাদ্যতালিকায় সবুজ শাক-সবজি, শুকনো ফল, মুরগির মাংস, মাছ, লাল মাংস, মসুর ডাল ও মটরশুটি রাখুন। আয়রন ফোর্টিফাইড সিরিয়াল খেলে আয়রনের ঘাটতিও পূরণ হয়।
এর সঙ্গে খান ডালিম ও বিটরুট। এই দুটি ফলিক অ্যাসিডও আয়রন সমৃদ্ধ। শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে বিটরুট ও ডালিমের রস নিয়মিত পান করতে পারেন।
ভিটামিন সি সেবন করুন
ভিটামিন সি সেবন আয়রনের পরিমাণ বাড়াতে সহায়ক। ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বাড়ায়। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন- টমেটো, কমলালেবু, লেবু খেলে আয়রনের পরিমাণ বেড়ে যায়।
আয়রন সাপ্লিমেন্ট
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, কারও যদি আয়রনের তীব্র ঘাটতি থাকে তাহলে আয়রন সাপ্লিমেন্ট বা ট্যাবলেট খেয়েও এর পরিমাণ বাড়ানো যেতে পারে। তবে তার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
এটি দ্রুত আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারে। আয়রন ট্যাবলেট দুধের সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। তাহলে বদহজম কিংবা বমির মতো সমস্যা হতে পারে।
আয়রনের ঘাটতির লক্ষণ
আয়রনের অভাবে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা এবং শ্বাসকষ্ট হয়। চুল পড়াও আয়রনের ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে চুল প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায় না, যার কারণে চুল ভেঙে পড়তে শুরু করে।